Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২১st মে ২০২২

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে জাতীয় ইনকোয়ারি

নারী ও শিশর প্রতি সহিংসতা এবং ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে ন্যাশনাল ইকনকোয়ারি বিষয়ক ধারণাপত্র

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ৯০তম কমিশন সভায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে ‘জাতীয় ইনকোয়ারি কমিটি’ গঠন করা হয়। এ ইনকোয়ারি কমিটি সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে প্রণীত একটি প্রতিবেদন সুপারিশ আকারে সরকারের নিকট হস্তান্তর করবে। কমিটি জানুয়ারি ২০২১ থেকে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে কার্যক্রম শুরু করেছে। এরই আওতায় সরকারী সংস্থা, বেসরকারী সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিকট থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

 

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ এর ১২ নং ধারা অনুসারে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান কার্যাবলী ও এখতিয়ারের আওতায় রয়েছে- মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, মানবাধিকার বিষয়ক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, গবেষণা, পরিবীক্ষণ এবং মানবাধিকার লংঘনের বিষয়ে তদন্ত, মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ নিষ্পত্তি, মানবাধিকার বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান। ন্যাশনাল ইনকোয়ারির উদ্দেশ্য হলো পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে ধর্ষণের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করে নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতার ‍ুবিষয়ে তদন্ত ও অনুসন্ধান চালানোর মাধ্যমে এর কারণ, ধরন, চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা এবং মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা। ধর্ষণ সর্ম্পকিত আইন, কার্যক্রম ও নীতিমালার পর্যাপ্ততা এবং এক্ষেত্রে কোনো ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন আছে কিনা- তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করা।

 

ধর্ষণ হল অন্যতম প্রধান মানবাধিকার লঙ্ঘন, যার শিকার মূলত নারী ও শিশু। বিশেশজ্ঞদের মতে ধর্ষণের কারণ হলো বিদ্যমান সামাজিক অবক্ষয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন, নৈতিকতার অবক্ষয় এবং নারীদের প্রতি বৈষম্য ও অসম্মানের সংস্কৃতি। কোভিড-১৯ চলাকালীন সময়েও পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশে ধর্ষণের মত ঘটনাগুলো বিরাজমান রয়েছে।

মাঠ পর্যায়ে ২২ টি জেলা এবং ২২ টি উপজেলা থেকে সরকারী কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, বেসরকারী সংস্হা/সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিকট থেকে প্রশ্নমালার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

২৫ ফেব্রুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত সরকারি সংস্থা, বেসরকারি সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের সাথে মোট ৩৬ টি মতবিনিময় সভা, রাঙ্গামাটি ও ঝিনাইদহ জেলার জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সাথে ২ টি মতবিনিময় সভা, ফেনী, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে ৪টি গণশুনানি আয়োজন করা হয়। গণশুনানিতে সরকারী-বেসরকরকারী কর্মকর্তা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ছাড়াও মাদ্রাসার শিক্ষক, বিবাহ রেজিস্ট্রারার ও মসজিদের ইমামগণ অংশগ্রহণ করেন। কোয়ালিটিভ তথ্যের জন্য ১৬ টি ফোকাস গ্রুপ আলোচনা এবং ২৩ জন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যদাতার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।

 

বিশেষ করে জুডিশিয়াল সার্ভিসের সকল জেলা ও দায়রা জজ, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন  ম্যাজিস্ট্রট, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকদের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এছাড়া ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনদের মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের  বিভাগীয় কমিশনার, বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি, এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকগণ।

 

ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ, গাজীপুর জেলার কাশিমপুর, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ জেলার কেন্দ্রীয় কারাগার সাজাপ্রাপ্ত ২০ জন ধর্ষকের মনস্তাত্তিক বিশ্লেষণের  উদ্দেশ্যে ইন ডেপথ ইন্টারভিউ করা হয়। ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে সেবাগ্রহণকারী সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুর ৩৭৩ জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।  সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবস্থিত ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে আগত ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুর মধ্যে দৈবচয়নের মাধ্যমে রিজিওনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টারের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এর মাধ্যমে ৩২ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। গবেষণাটিতে মিশ্র পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ন্যাশনাল ইনকোয়ারিতে মাঠ পর্যায় থেকে তুলে আনা তথ্যপ্রমাণ ও বিশ্লেষণগুলোর সহায়ক সেকেন্ডারি সোর্সের তথ্য ব্যবহার করা হয়। অনুসন্ধানের জন্য গবেষণায় প্রাসঙ্গিক তথ্য তুলে আনতে পরিমাণগত এবং গুণগত কৌশল ও টুলস ব্যবহার করা হয়।